ফাইভারে গিগ তৈরির পদ্ধতি

গিগ হলো আপনার অফার করা একটি সার্ভিস এর নাম। প্রাথমিক ভাবে ফাইবার আপনার গিগটির মূল্য $৫ ডলারে অফার বা বিক্রি করছে কাস্টমারের / বায়ারের কাছে এবং আপনাকে গিগটি তৈরির সময় আপনার দেওয়া শর্ত অনুসারে সম্পন্ন করতে হবে।

আপনি কী ধরনের কাজ করেন, তার ওপর নির্ভর করে আপনার গিগ সাজাতে পারেন। মনে রাখবেন, একটা ভালো গিগ আপনার ভাগ্য ঘুরিয়ে দিতে পারে। গিগ তৈরি করার সময় আমাদের কিছু কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। আসলে আমরা অনেকেই জানি যে টাইটেল হচ্ছে গিগের মুল অংশ। আর এটা একজন বায়ারের কাছেও খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আপনি যদি টাইটেল না ব্যবহার করেন তাহলে বায়ার আপনার গিগ খুঁজে পাবেনা। আর আপনাকে এমন একটি টাইটেল ব্যবহার করতে হবে যেনো টাইটেলটা দেখেই ভিজিটর আপনার গিগ ভিজিট করে দেখে।

তার পরের বিষয় নিয়ে যদি আমি কথা বলি তাহলে বলবো গিগে আপনি আপনার সেরা ৮-১০টি ডিজাইন দিয়ে গিগ তৈরী করবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে ভালো মানের গিগ তৈরি করা শিখতে হবে। সেজন্য আপনি ভালো রকমের ডিজাইনারের প্রোফাইল ঘুরে দেখতে পারেন।

আপনি চাইলে অনলাইনে ফাইভার সাকসেস কোর্সটি দেখতে পারেন যেখানে ১৪ রকমের কাজ শিখানো হয়েছে ফাইভার নিয়ে আশা করি ভাল একটা ধারনা পাবেন। এখানে তারা অনেক যত্ন সহকারে ও অনেক সহজ ভাবে ফাইভারের যাবতীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে।

অনলাইন মার্কেট প্লেসে কাজ পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই সেই কাজে পারদর্শী হতে হবে। আপনি আপনার যোগ্যতা অনুযায়ী একটি ক্যাটাগরী নির্ধারন করে নিন।এর পর আপনার স্কিল অনুযায়ী যতটা সম্ভব বেশি ইনফরমেশন দিয়ে গিগ প্রস্তুত করুন।তবে গিগে আজেবাজে কথা না লেখাই শ্রেয়। মুলভাব প্রকাশ করুন। চেষ্ঠা করুন গিগের একটি ভিডিও তৈরি করতে।কারন স্টিল ইমেজের চাইতে ভিডিও অনেক বেশি কাজে দেয়।এনিমেশন ভিডিও হলে আরো ভাল হয়। যথা সম্ভব নিজেকে রিপ্রেজেন্ট করতে চেষ্ঠা করুন ।আর অতীতের কোন প্রজেক্ট বা কাজ করে থাকলে তার রেফারেন্স ও দিতে পারেন।

আশা করি কাজে আসবে।

প্রথম ধাপ

ওভারভিউ বিভাগে প্রথমেই আপনাকে গিগের একটি শিরোনাম দিতে হবে। ফাইভারে সাধারণত ‘I will’ এই শব্দটি দিয়ে গিগ শুরু হয়। যেমন আপনি যদি লোগো ডিজাইনার হন, তাহলে আপনার গিগটি হবে এমন ‘I will Design Logo for your company’। অর্থাৎ আপনার গিগ সাজাতে হবে ‘I will’ শব্দটির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বাক্য দিয়ে। এরপর গিগটির বিভাগ এবং উপবিভাগ নির্বাচন করতে হবে। সেবার ধরন বিভাগে আপনি কোন ধরনের সেবা নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী, তা নির্বাচন করতে হবে। এরপর গিগ মেটাডেটা বিভাগে গিগ-এর সঙ্গে সংগতিপূর্ণ অপশনগুলো নির্বাচন করতে হবে। এবার আপনার গিগের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ ৬টি ট্যাগ দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে আপনি যে ধরনের গিগ তৈরি করবেন, সে ধরনের গিগ নিয়ে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের দেওয়া ট্যাগগুলো দেখে ধারণা নিতে পারেন। তবে কারও গিগ কখনোই নকল বা কপি করতে যাবেন না, এতে করে আপনার অ্যাকাউন্ট বাতিল হতে পারে। এ অংশটি শেষ হলে সেভ করে কনটিনিউ অপশনে ক্লিক করতে হবে।

দ্বিতীয় ধাপ

প্রাইসিং বিভাগে আপনাকে গিগের প্যাকেজ বানাতে হবে, অর্থাৎ যে সেবাটি দেবেন, তাঁর জন্য আলাদা তিনটি প্যাকেজ বানাবেন। চাইলে একটি প্যাকেজও বানাতে পারেন, তবে গিগের জন্য তিনটি প্যাকেজ থাকলে ভালো হয়। প্যাকেজ তৈরির পর সেগুলোর নাম, ক্লায়েন্টরা কোন ধরনের সেবা পাবে, তা উল্লেখ করার পাশাপাশি কোন প্যাকেজের জন্য কত দিন সময় লাগবে, তা–ও জানাতে হবে। প্রতিটি প্যাকেজের নিচে বেশ কিছু অপশন দেখাবে ফাইভার, প্যাকেজের বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্ক থাকা অপশনগুলো নির্বাচন করতে হবে। এবার প্যাকেজগুলো ব্যবহারের জন্য আপনি কত টাকা নেবেন, তা আলাদাভাবে উল্লেখ করতে হবে। আপনি চাইলে প্যাকেজগুলোর সঙ্গে অতিরিক্ত সেবাও দিতে পারেন। এ জন্য এক্সট্রা সার্ভিস অপশনে সহায়ক সেবাগুলোর নাম লিখে সেভ এবং কনটিনিউ অপশন নির্বাচন করতে হবে।

তৃতীয় ধাপ

ডেসক্রিপশন বিভাগে আপনার তৈরি গিগটির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য লিখতে হবে। আপনার গিগটি কোন কোন কাজে ব্যবহার করা যাবে, কেনার পর ক্লায়েন্ট কোন ধরনের সহায়তা পাবে বা বিক্রয়োত্তর সেবার পরিধি কত দিন, তা অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে। চাইলে আপনার তৈরি গিগের মতো যাঁরা গিগ বানান, তাঁদের দেওয়া তথ্যগুলো পড়ে দেখতে পারেন। এরপর গিগ বিষয়ে সচরাচর ক্লায়েন্টরা যেসব প্রশ্ন করেন, সেগুলোর উত্তর লিখতে হবে। সর্বোচ্চ ১০টি প্রশ্নের উত্তর এ বিভাগে যুক্ত করে দেওয়া যাবে।

চতুর্থ ধাপ

রিকোয়ারমেন্ট বিভাগে গিগ অর্ডার করলে আপনার যে ধরনের তথ্য বা সোর্স দরকার হবে, তার তথ্য উল্লেখ করতে হবে। যেমন কোনো ক্লায়েন্ট যদি ওয়েব ডিজাইনের জন্য আপনার গিগ কেনেন, তবে আপনাকে তার ওয়েবসাইটের ডোমেইন ও হোস্টিংয়ের তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ছবি বা নিবন্ধও পাঠাতে হবে। কারণ, এসব তথ্য ছাড়া আপনি নির্দিষ্ট সময়ে তার নির্দেশনামতো কাজ করতে পারবেন না। রিকোয়ারমেন্ট বিভাগে বিষয়গুলো আগে থেকে উল্লেখ করে দিলে কোনো ক্লায়েন্ট তথ্য সরবরাহ করতে রাজি না হলে আপনার গিগ অর্ডার করতে পারবে না।

পঞ্চম ধাপ

ইমেজ গ্যালারি বিভাগে আপনার সেবার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি ভিডিও এবং তিনটি ছবি যুক্ত করা যাবে। ছবিগুলো এমন হতে হবে, যেন সেগুলো দেখেই ক্লায়েন্টরা আপনার সেবা সম্পর্কে ভালো ধারণা পেতে পারেন। ছবিতে গিগের মূল তথ্যগুলো টেক্সট আকারে লেখার পাশাপাশি সহায়ক ছবি বা আইকন ব্যবহার করতে হবে। গিগ ইমেজগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তাই চেষ্টা করবেন গিগ ইমেজগুলোর মান যেন ভালো হয়। সেলারদের গিগ ইমেজের মানোন্নয়নে এই বিভাগে ফাইভারের ইমেজ ব্যবহারের নীতিমালা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে। ভালো মানের গিগ ইমেজ বানানোর জন্য আপনি চাইলে নীতিমালা অনুযায়ী কাজ করতে পারেন।

গ্যালারি বিভাগের নিচে আপনি দুটি পিডিএফ ডকুমেন্ট যুক্ত করতে পারবেন। ফলে চাইলেই আপনার বিভিন্ন কাজ নিয়ে ডকুমেন্ট তৈরি করে পিডিএফ ফরম্যাটে যুক্ত করতে পারবেন, যা আপনার পেশাগত পোর্টফোলিও হিসেবে কাজ করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *