আউটসোর্সিং

নিজ প্রতিষ্ঠানের বাইরে অন্য প্রতিষ্ঠান বা কোনো ব্যক্তিকে দিয়ে ইন্টারনেটভিত্তিক কাজ করানো হলো আউটসোর্সিং। যারা এ কাজের সঙ্গে জড়িত তারাই হলেন ফ্রিল্যান্সার। এর অর্থ মুক্ত বা স্বাধীন পেশাজীবী। 

আউটসোর্সিং সাইটের কাজগুলো বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভাগ করা থাকে। যেমন: ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, নেটওয়ার্কিং ও তথ্যব্যবস্থা, লেখা ও অনুবাদ, প্রশাসনিক সহায়তা, ডিজাইন ও মাল্টিমিডিয়া, গ্রাহকসেবা, বিক্রয় ও বিপণন, ব্যবসা-সেবাসহ আরো অনেক কিছু। আউটসোর্সিংয়ের কাজ পাওয়া যায় এমন অনেক ওয়েবসাইট আছে ইন্টারনেটে। গুগলে গিয়ে খোঁজ করলেই পাওয়া যাবে।

 আউটসোর্সিংয়ের ভুয়া সাইটও আছে ইন্টারনেটে। এ বিষয়ে নবীন ফ্রিল্যান্সারদের সতর্ক থাকা জরুরি। আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত এবং নির্ভরযোগ্য কয়েকটি সাইট হলো ফ্রিল্যান্সিং সাইট হলো ওডেস্ক, ফ্রিল্যান্সার এবং ইল্যান্স ডট কম। এসব সাইটে গেলে নবীন ফ্রিল্যান্সাররা আউটসোর্সিং কাজের বিষয়ে একটা পরিস্কার ধারণা পাবেন। আজ কাজ করার বিনিময়ে ফ্রিল্যান্স্যার আয় করবেন বৈদেশিক মুদ্রা। বর্তমানে ৪-৫টি আন্তর্জাতিক মানের ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস রয়েছে ইন্টারনেটে। মার্কেটপ্লেসগুলোর প্রতিটিতেই একটি কমন বিষয় থাকে, ভালো একটি প্রোফাইল তৈরি করা। অনলাইন মার্কেটপ্লেসেও প্রোফাইল দেখেই ক্লায়েন্ট বিবেচনা করবে আপনি কাজ পাওয়ার যোগ্য না অযোগ্য। এ কারণে প্রোফাইলকে যতটা সম্ভব আকর্ষণীয় করে তৈরি করতে হবে।

অনেকেই মনে করেন ফ্রিল্যান্সিং করে হাজার হাজার ডলার আয় করা খুব সহজ। কিন্তু এজন্য আপনার প্রয়োজনীয় দক্ষতা থাকতে হবে। মার্কেটে যেসব স্কিল এর চাহিদা রয়েছে সেগুলো ভালোভাবে আয়ত্ব করতে পারলে আপনি সত্যি সত্যি ফ্রিল্যান্সিং করে সুন্দর জীবনযাপন করতে পারবেন।

ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা ফ্রিল্যান্সিং শেখার বা শুরু করার আগে অবশ্যই এর ভালো ও মন্দ, দুই দিক সম্পর্কেই ধারণা অর্জন করা একান্ত জরুরি।

ফ্রিল্যান্সিং এর প্রধান সুবিধাসমুহঃ

  • ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সার নিজেই নিজের বস। একজন ফ্রিল্যান্সার নিজেই নিজের কাজের সময়, রেট, ইত্যাদি ঠিক করার ক্ষমতা রাখেন। এছাড়াও একজন ফ্রিল্যান্সার তার ইচ্ছানুযায়ী ক্লায়েন্ট গ্রহণ বা বর্জন করার ক্ষমতা রাখেন।
  • ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে যেহেতু ইনভেস্ট বলতে শুধু সময়কেই কাজে লাগাতে হচ্ছে, সেক্ষেত্রে লাভ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
  • ফ্রিল্যান্সিং করে ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকি থাকলেও তা তুলনামূলক কম। ফুলটাইম ফ্রিল্যান্সার হলে আপনার নিজের সময় অনুসারে নিজেই কাজ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনার কাজ ও জীবনের অন্যান্য কাজের ব্যালেন্স বজায় রেখে চলা চিরাচরিত কাজের চেয়ে অনেকটাই সহজ।
আউটসোর্সিং
আউটসোর্সিং

ফ্রিল্যান্সিং এর অসুবিধাসমূহঃ

  • ফ্রিল্যান্সিং এর উল্লেখযোগ্য কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে। যেমনঃ যেহেতু আপনি নিজেই নিজের বস, সেক্ষেত্রে কাজ নেওয়া থেকে শুরু করে সেটি ক্লায়েন্টের হাতে বুঝিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি একই সাথে চলতে থাকা অন্যান্য কাজের হিসাবও আপনাকেই রাখতে হবে। অর্থাৎ আপনি নিজেই নিজের কর্মচারী, আবার নিজেই নিজের বস।
  • ফ্রিল্যান্সিং এ কাজ এর মাধ্যমেই টাকা পাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে কাজ না করলে আপনার উপার্জনও বন্ধ।
  • চাকরির ক্ষেত্রে আপনি প্রয়োজনে ছুটি নেওয়া সুবিধা থাকলেও ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে আপনার কাজ আপনাকেই যেহেতু করতে হয়, সেক্ষেত্রে অবসরের সময়গুলোও কাজের মাধ্যমে আপনার ঠিকই পুষিয়ে দেওয়া লাগবে।
  • ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে কাজ পাওয়া কিংবা সময়মত পেমেন্ট, এই দুইটি বিষয়ই যথেষ্ট নড়বড়ে বিষয়ের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। তাই ফুলটাইম ফ্রিল্যান্সার হলে সেক্ষেত্রে আপনার আর্থিক অবস্থাতে স্থায়িত্ব বজায় রাখতে সমস্যা হওয়ার কথা অদ্ভুত কিছু নয়।

চাকরির মত নির্দিষ্ট সময় ও স্থানের কাছে দায়বদ্ধ থাকতে হয় না বলে ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে স্বাধীনতা বরাবরই বেশি। স্কিল টেস্ট দেয়া থাকলে ভালো কাজ পেতে সুবিধা হবে। ইল্যান্স ডট কমে বিনামূল্যে অসংখ্যবার স্কিল টেস্ট দেয়া যায়। স্কিল টেস্ট দেয়া থাকলে ক্লায়েন্ট বুঝবে যে আপনি ফ্রিল্যান্সার হিসেবে নতুন অথবা অভিজ্ঞ। প্রোফাইলে আগে কী কী কাজ করেছেন তার একটি তালিকা, যেমন নিজের তৈরি লোগো, ওয়েবসাইটের স্ক্রিনশট, ইউনিভার্সিটিতে তৈরি কোনো প্রেজেন্টেশন, কোনো সার্টিফিকেটের স্ক্যান করা ইমেজ দেয়া যেতে পারে। এবার মাঠে নেমে পড়ুন। হয়ে উঠুন ফ্রিল্যান্সার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *