SEM and SEO

সার্চ এঞ্জিন মার্কেটিং (SEM) এবং সার্চ এঞ্জিন অপটিমাইজেশান (SEO)

আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন যারা ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে পড়াশোনা করার চেষ্টা করি। অনেক কিছুর জানার উদ্দেশ্য নিয়ে বিভিন্ন ব্লগ সাইট পড়ি। এই সেলফ লার্নিং জার্নিতে আমাদের অনেক সময় কিছু কিছু বিষয় বুঝতে একটু সময় লাগে। কখনো কখনো বিষয়টি ভালো মতো বোঝা যায় না। অনেক সময় একটার মধ্যে আরেকটি বিষয় গুলিয়ে ফেলি। আজকে আমাদের আলোচনায় থাকবে তেমন, একটি বিভ্রান্ত মূলক টার্ম। আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় নির্ধারণ করেছি সার্চ এঞ্জিন মার্কেটিং (SEM) এবং সার্চ এঞ্জিন অপটিমাইজেশান (SEO)। 

সার্চ এঞ্জিন মার্কেটিং (SEM) এবং সার্চ এঞ্জিন অপটিমাইজেশান (SEO) Search engine marketing and search engine optimization

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং কি? 

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং বলতে সার্চ ইঞ্জিন গুলোতে ওয়েবসাইটের বিজ্ঞাপন দেওয়ার পদ্ধতিকে বুঝায়। যাকে সংক্ষেপে বলা হয় এসইএম (SEM)। ওয়েবসাইটের ভিজিটর বা সেলস বাড়ানোর উদ্দেশ্যে বিশ্বের নামিদামি ব্র্যান্ড সহ ছোট, বড় অনেক কোম্পানি তাদের প্রচারণার জন্য এই SEM বা সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন।

সংজ্ঞা থেকে অনেকেই হয়তো বিষয়টি পরিষ্কার ভাবে বুঝতে পারিনি, চিন্তার কোন কারণ নেই। আপনাদের জন্য আমাদের আরো আয়োজন রয়েছে। নিচে আমরা বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি তুলনামূলক পার্থক্য সহ। আশা করি পাঠক ভালো কিছু অপেক্ষা করছে আপনাদের জন্য। 

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং ওভারভিউ

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং একটি ডিজিটাল মার্কেটিং পদ্ধতি। যার মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে এড দেওয়া যায় সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেইজে বা সার্চ ইঞ্জিন গুলোতে। যেমন গুগল, বিং, এবং ইয়াহু সার্চ ইত্যাদি। সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেইজকে সংক্ষেপে বলা হয়ে থাকে এসইআরপি (SERP) এটি আর কিছু না, আপনি যখন গুগলে কোন কিছু সার্চ করেন তখন রেজাল্ট সহ যে পেজ আসে তাকেই সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেইজ বলা হয়।

অর্গানিক নিয়মে সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাঙ্ক করতে অনেক ভালো মানের এসইও জ্ঞান থাকা লাগে, এর পরে এসইওর সকল নিয়ম রক্ষা করে র‍্যাঙ্ক এ আসতে হয়। এটি অনেক ঝামেলা পূর্ন কাজ। অর্গানিক নিয়মে র‍্যাঙ্ক করতে কখনো কখনো ৬ মাসের অধিক সময় লেগে যায়। aherf এর দেওয়া তথ্য মতে, গড়ে প্রতি পেইজ গুগল টপ-টেন র‍্যাঙ্ক করতে সময় লাগে ২-৬ মাস এবং দিনের হিসেবে সেটি গিয়ে পৌছায় ৬১- ১৮২ দিনে। 

বলছিলাম সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাংকিং এর কথা, সার্চ ইঞ্জিনে  প্রথম পেইজে র‍্যাঙ্ক করতে পারে সর্বোচ্চ ৮-১০ টি ওয়েবসাইট। অর্গানিক নিয়মে র‍্যাঙ্ক করতে অনেক সময় লেগে যায়। অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান এতদিন অপেক্ষা করতে চায় না, তাই তারা পেইড এডভার্টাইজিং এর মাধ্যমে গুগলের সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেইজের প্রথমে নিয়ে আসেন। নিচের ছবিটি ভালো করে লক্ষ্য করলে আপনাদের ধারণা আরো স্বচ্ছ হবে।

isFBT9hanD8MgoVsTUQJ8mUyp 5Uve5UCMFY V yRvVFKqe2RUq1f8 yG2TVsq2zbnFOab5jFffjb0bkbTFbvFBbbWE42HZhm0LifTRwZYfIK5cj6ORwlaS5eewPa SsUXFmUSY=s0

এখানে যদি আপনি ভালো করে লক্ষ্য করে থাকেন তাহলে দেখবেন, আমাদের কি-ওয়ার্ড ছিলো ‘email marketing’। অর্থাৎ আমরা এই কি-ওয়ার্ড দিয়ে গুগল এ সার্চ করেছি। এবার লক্ষ্য করুন ফলাফলের দিকে। আমি বুঝার সুবিধার্থে গুগলের পেইজ টি বাংলা করে দিয়েছি। কারন ইংরেজিতে হলে লেখা থাকতো ‘ad’ আর বাংলা হওয়ায় লেখা আছে বিজ্ঞাপন, তাই এটি সহজে চোখে পড়বে ধারণা করেই আমি বাংলা করে দিয়েছি সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেইজটি। 

বলা হয়ে থাকে ৮০% এর অধিক ইউজার এই এডভার্টাইজিং সম্পর্কে ধারণা রাখেন না। এখানে স্পষ্ট করে লেখা আছে ‘বিজ্ঞাপন’ লেখাটি। তার মানে প্রথম যে রেজাল্ট টি তারা শো করছে সেটি কিন্তু অর্গানিক রেজাল্ট নয়, এটি একটি পেইড রেজাল্ট, যার জন্য সার্চ ইঞ্জিন গুলোকে টাকা দিতে হয়। 

অর্থাৎ প্রতি ক্লিক এর বিনিময়ে সার্চ ইঞ্জিন গুলো কে টাকা দিতে হবে। শুধু মাত্র সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেইজে বিজ্ঞাপন টি দেখানোর জন্য পয়সা নেয় না সার্চ ইঞ্জিন গুলো। আর এসইও এর ভাষায় এটিকে বলা হয়ে থাকে সিপিসি (CPC) এই সিপিসির মানে হচ্ছে – কস্ট পার ক্লিক। অর্থাৎ তখনই শুধু টাকা গুনতে হবে যখন কোন ইউজার এই এড টিতে ক্লিক করবে। ব্যবপারটা আপাত দৃষ্টিতে দারুন মনে হলেও এটির জন্য পার ক্লিকে প্রচুর পরিমানে খরচ করতে হয়। হ্যাঁ, তবে এটা সত্য, এটি আপনাকে নিশ্চিত কিছু ভিজিটর দিবে। এই সিপিসির দাম নির্ভর করে ওয়েবসাইটের ধরণ অনুসারে। 

বেশি দামি পন্য হলে সিপিসির রেইট বেড়ে যায়, আর পন্যের দাম কম হলে সিপিসি কমে যায়। এই ভাবে সার্চ ইঞ্জিন গুলো পেইড মার্কেটিং করানোর সুযোগ  দিয়ে থাকে। 

গুগল এবং অন্যন্য যে সকল সার্চ ইঞ্জিন রয়েছে তারা প্রতিটি বিজ্ঞাপনের ক্লিকের বিপরীতে টাকা নিয়ে থাকেন। এই বিজ্ঞাপন গুলো মূল সার্চ ইঞ্জিনের রেজাল্ট গুলোর থেকে আলাদা। এছাড়া আপনি যদি পিসি থেকে কানেক্ট হয়ে থাকেন তাহলে হাতের ডান পাশে আরো অনেক গুলো পেইড সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং করে থাকে সার্চ ইঞ্জিন গুলো।

আমরা আরেকটা বিষয় লক্ষ্য করেছি, আমাদের কিছু গ্রাহকের এখনো সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এবং সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন নিয়ে ধোঁয়াশা রয়ে গেছে। অসুবিধা নেই, আমরা এটি নিয়েই পরের অংশে আরো সুন্দর করে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। 

সার্চ মার্কেটিং কত প্রকার?

  • সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং – পেইড
  • সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন – অর্গানিক 

এসইও এবং এসইএম এর মাঝে পার্থক্য কি? 

এসইও অর্থ হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। এসইও হচ্ছে –অর্গানিক। 

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এর সংক্ষিপ্ত রুপ হচ্ছে এসইএম। এই এসইএম হচ্ছে –পেইড। 

অর্গানিক মানে আমরা এসইও এর ক্ষেত্রে সহজে বুঝে থাকি- যার জন্য পয়সা খরচ করতে হয় না, তাকেই অর্গানিক রেজাল্ট ধরা হয়। আমাদের সাধারণ গুগল এর রেজাল্ট গুলো হচ্ছে অর্গানিক।

আর পেইড ভার্সন হচ্ছে, আমাদের স্ক্রিনশটে দেখানো বিজ্ঞাপন লিখা সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট গুলো। অর্থাৎ এগুলো সাধারন ভাবে আমাদের ‘email marketing’ কি-ওয়ার্ড এর জন্য আসেনি। টাকার বিনিময়ে অর্থাৎ সিপিসির মাধ্যমে পেইড রেজাল্ট গুলো দেখানো হয়ে থাকে। 

সংক্ষেতে যদি আরেকবার বলি- সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং হ’লো পেইড মার্কেটিং যা মূলত সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর মত। আর সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন হ’লো ফ্রী মার্কেটিং যা শুধুমাত্র সার্চ ইঞ্জিন গুলোর অপটিমাইজ করার রুল মেনে চললে সার্চ ইঞ্জিন গুলো নিজে থেকেই অডিয়েন্সের নিকট পোঁছে দেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *