আমরা অনেকেই অনেক কাজে দক্ষ। আমদের অনেকেরই বিভিন্ন রকম ভালো স্কিল রয়েছে। সেগুলোর প্রদর্শন বা ডিসপ্লে করার প্রক্রিয়াই হচ্ছে পোর্টফোলিও। আপনি কোনো একটি কাজে বিশেষ দক্ষ হতে পারেন। আপনার স্কিল ভাল হতে পারে। কিন্তু ক্লাইন্ট কে সেটা দেখাতে হয় কাজের মাধ্যমে অর্থোপার্জনের জন্য। এজন্য আপনার নিজের করা সুন্দর কাজটি করে রাখতে হয়।
ধরুন, আপনি বিজনেস কার্ড ডিজাইন করতে পারেন। আপনার নিজের করা একটি বিজনেস কার্ড করে রাখাটাই হলো পোর্টফোলিও। অন্যের ডিজাইন নকল করে পোর্টফোলিও করা যাবে না। পোর্টফলিও বলতে নিজের কাজ করে বুঝায় যা নকলমুক্ত।
পোর্টফোলিও
পোর্টফোলিও হচ্ছে আপনার কাজ ও দক্ষতার সমষ্টি। অর্থাৎ আপনি যে কাজগুলো করে থাকেন সেইসব কাজের ডেমো বা নমুনা। মনে করুন আপনি একজন ওয়েব ডিজাইনার এবং আপনি আপনার ক্লায়েন্ট কে বললেন একটা কাজ আপনি ১০০$ এ করে দিবেন। এখন কি আপনার সেই ক্লায়েন্ট আপনার কোন কাজ না দেখেই, আপনি ভাল কাজ করতে পারেন কি না সেটা না জেনেই আপনাকে ১০০$ দিয়ে দিবে? আর বলবে আমার জন্য একটি ওয়েবসাইট বানিয়ে দাও!
না, এরকম টা কখনোই হয় না। আপনার কাজের নমুনা না দেখে কোন ক্লায়েন্ট’ই চাইবে না আপনাকে কাজ দিতে। কারন সে জানে না আপনি তার কাজ টি সঠিক ভাবে শেষ করতে পারবেন কিনা। আর তাই আপনি যে কাজ গুলো ইতোমধ্যে শেষ করেছেন এবং সামনে সে কাজগুলো আরো করতে চান এমন কাজের ডেমো গুলো যদি আপনি এক জায়গায় সাজিয়ে রাখেন তাহলে কিন্তু আপনার ক্লায়েন্ট সেই কাজগুলো দেখে আপনার দক্ষতা সম্পর্কে একটা ধারণা পেয়ে যাবে আর আপনাকে কাজ দিতেও সাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন। আর আপনি যে আপনার বেস্ট কাজ গুলো সাজিয়ে রাখলেন এভাবে এটিই হচ্ছে আপনার পোর্টফোলিও।
পোর্টফোলিও আপনার প্রফেশনাল জ্ঞান, দক্ষতা, গুণাবলি ও অর্জন উপস্থাপনের একটি উপায়। এর মাধ্যমে আগ্রহী যে কেউ আপনার কর্মজীবন সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পেতে পারেন। বিশেষ করে নতুন চাকরি বা কাজ পাবার বেলায় এটি আপনাকে সাহায্য করবে।
প্রফেশনাল পোর্টফোলিও কী?
প্রফেশনাল পোর্টফোলিও হলো আপনার যাবতীয় উল্লেখযোগ্য কাজের একটি সংকলন। আপনি যেসব বিষয়ের উপর কাজ করেছেন, সেগুলোর বিস্তারিত বর্ণনা বা ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনের মাধ্যমে এটি তৈরি করা সম্ভব।
পেশা আর কাজের ক্ষেত্র অনুযায়ী পোর্টফোলিওর ধরন আলাদা হয়। যেমন, একজন সেলস ম্যানেজার তার ক্লায়েন্টের সংখ্যা, সেলসের পরিমাণ ও সেলস কর্মী ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত তথ্য একটি ডকুমেন্টে সংরক্ষণ করতে পারেন। আবার আপনি একজন গ্রাফিক ডিজাইনার হলে আপনার কাছে থাকা উচিত নিজের করা ডিজাইনের নমুনা আর ডিজাইনে ব্যবহৃত সফটওয়্যার বা টুল ও ক্লায়েন্ট সম্পর্কিত তথ্য।
পোর্টফোলিওর ফরম্যাট কেমন হয়?
প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন ফরম্যাটে পোর্টফোলিও বানানো সম্ভব। যেমন:
- ওয়ার্ড ডকুমেন্ট
- এক্সেল শীট
- পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন
- ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট ও ব্লগ
- কমিউনিটি ওয়েবসাইট
- প্রোগ্রামার ও ডেভেলপারদের জন্য গিটহাব (GitHub)
- গ্রাফিক ডিজাইনার ও ইউএক্স ডিজাইনারদের জন্য বিহ্যান্স (Behance)
- আর্টিস্টদের জন্য ডিভিয়েন্টআর্ট (DeviantArt)
পোর্টফোলিওর প্রকারভেদ
পোর্টফোলিও সধারণত দুই প্রকার হয়ে থাকে।
- অনলাইন পোর্টফোলিওঃ যদি আপনি একজন ফ্রিল্যান্সার হয়ে থাকেন আর আপনি অনলাইনে ইন্টারন্যাশনাল কাজ করে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার পক্ষে কাউকে সরাসরি আপনার কাজ দেখানো সম্ভব না সামনে থেকে। তাই আপনার জন্য সমাধান হচ্ছে আপনি একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে আপনার কাজগুলো সাজিয়ে রাখলেন এবং সেই সাইট টি যে কাউকে দেখাতে পারেন।
- প্রিন্টেড পোর্টফোলিওঃ আর যদি আপনি লোকাল মার্কেটে কাজ করে থাকেন ও ক্লায়েন্ট দের সাথে সরাসরি কথা বলে কাজ নিয়ে থাকেন তাহলে আপনি প্রিন্টেড পোর্টফোলিও ব্যবহার করতে পারেন যেখানে আপনার করা কাজের নমুনা থাকবে। ও আপনি সহজেই কাউকে দেটি দেখাতে পারবেন। কিন্তু লোকাল মার্কেটে কাজ করলেও আপনার একটি ওয়েবসাইট থাকলে সুবিধা হয়, কারন আপনি তো আর সব সময় আপনার প্রিন্টেড পোর্টফোলিও সাথে নিয়ে ঘুরবেন না।
কোন কোন পেশায় পোর্টফোলিও দরকার হয়?
কমবেশি সব কাজের জন্য পোর্টফোলিও বানানো যায়। যেমন, একজন বেকার নিজের তৈরি কেক ও পেস্ট্রির ছবি দিয়ে তার বেকিং দক্ষতা নিয়ে অন্যদের জানাতে পারেন। তবে সব পেশায় এর প্রয়োজন হয় না। যেসব পেশায় এটি কাজে দেবে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
- গ্রাফিক ডিজাইনার
- ইন্টেরিয়র ডিজাইনার
- ওয়েব ডিজাইনার
- অ্যানিমেটর
- থ্রিডি আর্টিস্ট
- থ্রিডি অ্যানিমেটর
- ওয়েব ডেভেলপার
- আর্টিস্ট
- মডেল ও অভিনেতা
আরো জানতে ক্লিক করুনঃ
পোর্টফোলিও তৈরির প্রক্রিয়া How to make portfolio?